Tuesday 17 November 2015

খবর

           "খবর"

            বিশ্বাস তন্ময়


খবর আসছে এক বাতাসের মেলে চেপে
মহাপ্রলয়ের খবর
হঠাৎ বজ্রপাতে স্তম্ভীত হবে পৃথিবী
বার্ধক্য প্রহরে তারুন্যের উন্মাদনায় অভিশপ্ত পৃথিবী
দেখবেনা দ্বাবিংশের আলোক ছটা আর
বাতাসে তাই বারুদের গন্ধ ভাশে আজ
মাটিতে ঝলকায়  রক্তের মানচিত্র ।
খবর আসছে এক আগমনী বার্তা নিয়ে
মহামারির অর্তনাদ বক্ষে ধারণ করে
দূরন্ত দূর্মদ গতিতে সময়ের পাতা জুড়ে
চারিদিকে তাই শোনা যায় হাহাকার
খরা দুর্ভিক্ষে হবে সব ছারখার।

Monday 16 November 2015

পূর্বাভাশ

 "পূর্বাভাশ"
 বিশ্বাস তন্ময়

|| সময়ের দোলায় দুলতে দুলতে
আসছে সে দিন এক
যে দিন ধরিত্রী মাতার জঠর ফাড়িয়াও
জুটবে না এক মুঠো শস্য বিন্দু
আমার পিতার স্কন্দে লুটায়ে থাকবে আমার লাশ
সহস্র রমনীর দুগ্ধ দিয়ে তৃষ্না মেটাবে বসুমতি!
দশদিক হতে আমি আজ রণহুম্কার শুনতে পাই
ছোখ বুঝলে রক্ত লেলিহান শিখা হাতছানি দিয়ে ডাকে আমায়
এক মহাযুদ্ধের পূর্বাভাশ দেখতে পাই দিকে দিকে!
আমি তো শুধু সেই দিনের অপেক্ষায় অপেক্ষয়মান
যে দিন ব্রহ্মান্ডের প্রতাপশালীর মুখে জুটবে না নিজ বিষ্টা
হিংসা বিদেষের শৃংখল দিয়ে পাকড়াও করা হবে স্বয়ং জগৎঈশ্বর কে
এবং এই মানব সরবরেই হবে ওর বিচার !
যে দিন ক্ষুদার জ্বালায় মুমুর্ষ প্রায় শকুনের দল
টেনে হিচড়ে ঘরের বাহির করবে আমার কুলদেবীকে
সেদিন আমি আমার হিংসাত উদর পুর্ত্তি করবো
আমার মায়ের রক্ত দিয়ে !
আসছে সে দিন এক চারিদিকে তারই পূর্বাভাশ শোনা যায়। ||


                              ১৬-১১-২০১৫ । শাপলা ভবন (১৯ নম্বর - হোস্টেল ), ঢাকা। 

Saturday 14 November 2015

সময় খেয়া


"সময় খেয়া"
বিশ্বাস তন্ময়

|| এক দুই তিন করে হারায় যে সব সময়ের ঘরে
ওরে, সময়ের খাঁচা কে বাধিল’রে ?
দু’দিনের এই ছোট্ট জীবন পাবিনা’রে আর
ভুলে সব হিংসা বিবাদ সময়কে জাপটে ধর
করে যা সব কৃতকার্য মানিস না’কো হার ।

দাসের ন্যায় জীবন তোরা সইবি কত কাল
প্রভুদের অই পদ তলেই রইবি চিরকাল ?
সুখ-দুঃখের অন্তরালে দেখরে এবার জগৎটারে
প্রকৃতি কেমন চুপিসারে ছন্দ বুনে যায়
চলরে মোরা সবাই মিলে প্রকৃতির সুরে গায়।

অই যে দেখ হিমাদ্রি আছে দন্ডায়মান
হিমাদ্রির মতই তোরা করে যা সংগ্রাম
দুঃখ যতই আসে আসুক মাথা নোয়াবার নয়
আঁধার শেষে আলোর দেখা মিলবে নিশ্চয়
সময়ের অই যন্ত্রকে তোরা করিস কেন ভয় ?

সময় ও'যে বড় নিষ্ঠুর একা একা বোয়ে যায়
সময়ের টানে প্রিয়জন শুধু দূরে সরে চলে যায়
তাতে নেই যে মোদের ভয়
ভেঙ্গেফেলে অই জীর্ন কুঠির
চলরে মোরা সবাই মিলে সময়ের খেয়া বাই ||

শুধু মানিস নে পরাজয়
পরাজয় যদি মানতেই হয়, পাকড়া তবে মৃত্যু দুয়ার
অপমানিতের মরণ জ্বালায় জ্ব্লবি কত আর ?

                      
                                    ১৪-১১-২০১৫ । শাপলা ভবন (১৯ নম্বর - হোস্টেল ), ঢাকা। 

Thursday 5 November 2015

ভিখারী দর্পন


"ভিখারী দর্পন"
 বিশ্বাস তন্ময়

|| ভিখারিদেরও আবার জাত আছে নাকি !
ভিক্ষাবৃত্তি যাদের অভ্যাস তারা তো ভিক্ষা করবেই !
উদার পুত্তির জন্য কিসের আবার নিমন্ত্রণ !
পেট পূজা হলেই হলো, তা তাতে যদি কেউ কুকুর ভাবে
তাতে তেমন আর কি এসে যায় !
আমরা হলাম সমাজের নিকৃষ্ট শ্রেণীর লোক, যাকে বলে যাচ্ছেতাই !
বাবুরা যদি একটু ভালবেসে, আদর করে গালি দেয় বা ভিষ্মণ বাক্য প্রয়োগ করে
কিম্বা স্নেহ করে জুতাতে একটু ছানার ন্যায় মল মাখিয়ে নাকে-মুখে বুলিয়ে দেয়
তাতে কি বা এমন এসে যায়, মলটা মুছেফেলে একটু আড়াল করে
ছানাটা উদার পুত্তি করাতেই আমাদের প্রশান্তি !

কিন্তু, একাকি নির্জনে যখন জলাশয় মাঝে
কালো রক্ত নালী দিয়ে খসে-গোলে পড়া রক্ত মাংসের
প্রতিবিম্ব চখে পড়ে, তখন নিজের অজান্তেই ভয়ে আত্কে উঠি !
সত্যি-ই কি এটাই চেয়ে ছিলাম !!!
হৃদয় কুঠিরে একটি প্রদীপ প্রজ্বলন করে
তার প্রভা বিশ্ব দুয়ারে ছড়াতে চেয়ে ছিলাম !
কিন্তু, একি হলো !
প্রদীপ শিখা যে উর্বর আত্মাকে কুলসিত করে দিল
জ্বালীয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিল সেই হৃদয়কেই !
আর আত্মা পোড়া সেই তিক্ত-কটু গন্ধ !
না, আমি আর দম নিতে পারিনা, হৃদয্ন্ত্র বিকল হয়ে আসে !
মাঝ নদীতে হাবুডুবু খাওয়া মানুষটির ন্যায় শেষ রক্ষার আশায়
বাবুদের তিক্তু-বিষাদ শীতল ছায়া প্রত্যাশা করেই আমাদের অন্ন-বস্ত্র,
দেখা-অদেখা, আশা-নিরাশার মাঝের শেষ অনুভূতি-ই পথ চলার শেষ পন্থা |
সৃষ্টি কর্তা সৃষ্টির সাথে সাথে যদি একটা হৃদয় মাপা পাল্লা পাঠাতেন
তবে ভিখারিদের আত্মাকে নংড়ে-মুচড়ে দেখতাম সেখানে কই ছ্টাক অনুভূতি অবশিষ্ট আছে !
যে সত্তা তার আত্মাকে চিনতে পারে না, তাকে আমি ঘৃনা করি |
দূর কর তোমার অই স্নেহের শীতল পাটী, আমারা সামনে থেকে !
অভুক্ত হয়েই আমি বেশ আছি, চায় না তোমার স্নেহের কাতরতা
তোমরা তো উপর তলার লোক, তাই তো জুতার মালা আমাদেরই প্রাপ্য !
আজ ভালবাসা কে ভালবাসা আর ঘৃনা কে ঘৃনা বলতে বড় লজ্জাবোধ হয় |
কাব্যিক চর্চা তো শুধু বাবুদের জন্য, তবুও বলতে ইচ্ছা হয়;
"ভাল লাগে সব কিছু ভাল লাগে, মানুষের সঙ্গ ছাড়া আজ সব কিছুই ভাল লাগে" ! ||


                                                                   ০৫-১১-২০১৫ । শাপলা ভবন (১৯ নম্বর - হোস্টেল ), ঢাকা।

Wednesday 4 November 2015

ফিরতি আকাশ



                     "ফিরতি আকাশ"
                         বিশ্বাস তন্ময়

 || সাদা কাল নীলের মোড়কে আচ্ছাদিত সুবিশাল আকাশ
   তারই মাঝে দক্ষিণা মুখে ভেঁসে চলা বিশাল হিমাদ্রীর
   গা বেঁয়ে ঝরে পড়া ঝরনা ধারা টাপুর টুপুর শব্দে পতিত হচ্ছে
   তৃণ-গুল্মাধীর সবুজ ফ্রেমে বাঁধান জলাশয়ের বক্ষ ভেঁদ করে |
   ঢেউয়ে তালে তাল মিলিয়ে নেচে চলা শেওলা ফুলের
   প্রেমে মহিমার্নীত হয়ে সান্ধ্য বালিকার সর্পের ন্যায় একে বেঁকে অবগহণ,
   ওষ্ঠ দিয়ে ঝরে পড়া বিন্দু বিন্দু জল কণা মাঝে সৃষ্ট  সুবিশাল জল রাশি
   তারই উপর ভাঁসমান পালতোলা নৌকা নিয়ে দিক-বেদিক হারানোর
   বাসনা জাগল প্রাণে, আজ এ সন্ধ্যায় বসে ফিরতি ট্রেনের কণে ||

                                                                   ০৪-১১-২০১৫ । শাপলা ভবন (১৯ নম্বর - হোস্টেল ), ঢাকা।