Thursday 5 November 2015

ভিখারী দর্পন


"ভিখারী দর্পন"
 বিশ্বাস তন্ময়

|| ভিখারিদেরও আবার জাত আছে নাকি !
ভিক্ষাবৃত্তি যাদের অভ্যাস তারা তো ভিক্ষা করবেই !
উদার পুত্তির জন্য কিসের আবার নিমন্ত্রণ !
পেট পূজা হলেই হলো, তা তাতে যদি কেউ কুকুর ভাবে
তাতে তেমন আর কি এসে যায় !
আমরা হলাম সমাজের নিকৃষ্ট শ্রেণীর লোক, যাকে বলে যাচ্ছেতাই !
বাবুরা যদি একটু ভালবেসে, আদর করে গালি দেয় বা ভিষ্মণ বাক্য প্রয়োগ করে
কিম্বা স্নেহ করে জুতাতে একটু ছানার ন্যায় মল মাখিয়ে নাকে-মুখে বুলিয়ে দেয়
তাতে কি বা এমন এসে যায়, মলটা মুছেফেলে একটু আড়াল করে
ছানাটা উদার পুত্তি করাতেই আমাদের প্রশান্তি !

কিন্তু, একাকি নির্জনে যখন জলাশয় মাঝে
কালো রক্ত নালী দিয়ে খসে-গোলে পড়া রক্ত মাংসের
প্রতিবিম্ব চখে পড়ে, তখন নিজের অজান্তেই ভয়ে আত্কে উঠি !
সত্যি-ই কি এটাই চেয়ে ছিলাম !!!
হৃদয় কুঠিরে একটি প্রদীপ প্রজ্বলন করে
তার প্রভা বিশ্ব দুয়ারে ছড়াতে চেয়ে ছিলাম !
কিন্তু, একি হলো !
প্রদীপ শিখা যে উর্বর আত্মাকে কুলসিত করে দিল
জ্বালীয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিল সেই হৃদয়কেই !
আর আত্মা পোড়া সেই তিক্ত-কটু গন্ধ !
না, আমি আর দম নিতে পারিনা, হৃদয্ন্ত্র বিকল হয়ে আসে !
মাঝ নদীতে হাবুডুবু খাওয়া মানুষটির ন্যায় শেষ রক্ষার আশায়
বাবুদের তিক্তু-বিষাদ শীতল ছায়া প্রত্যাশা করেই আমাদের অন্ন-বস্ত্র,
দেখা-অদেখা, আশা-নিরাশার মাঝের শেষ অনুভূতি-ই পথ চলার শেষ পন্থা |
সৃষ্টি কর্তা সৃষ্টির সাথে সাথে যদি একটা হৃদয় মাপা পাল্লা পাঠাতেন
তবে ভিখারিদের আত্মাকে নংড়ে-মুচড়ে দেখতাম সেখানে কই ছ্টাক অনুভূতি অবশিষ্ট আছে !
যে সত্তা তার আত্মাকে চিনতে পারে না, তাকে আমি ঘৃনা করি |
দূর কর তোমার অই স্নেহের শীতল পাটী, আমারা সামনে থেকে !
অভুক্ত হয়েই আমি বেশ আছি, চায় না তোমার স্নেহের কাতরতা
তোমরা তো উপর তলার লোক, তাই তো জুতার মালা আমাদেরই প্রাপ্য !
আজ ভালবাসা কে ভালবাসা আর ঘৃনা কে ঘৃনা বলতে বড় লজ্জাবোধ হয় |
কাব্যিক চর্চা তো শুধু বাবুদের জন্য, তবুও বলতে ইচ্ছা হয়;
"ভাল লাগে সব কিছু ভাল লাগে, মানুষের সঙ্গ ছাড়া আজ সব কিছুই ভাল লাগে" ! ||


                                                                   ০৫-১১-২০১৫ । শাপলা ভবন (১৯ নম্বর - হোস্টেল ), ঢাকা।

No comments:

Post a Comment